কোন দেশে সহজে স্কলারশিপ পাওয়া যায়, ফুল ফ্রি স্কলারশিপ, যোগ্যতা

কোন দেশে সহজে স্কলারশিপ পাওয়া যায়, কিভাবে পাওয়া যায় এবং ফ্রি স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য কেমন যোগ্যতা প্রয়োজন এই সকল বিষয়ে আজকের এই পোস্টে আপনাদেরকে জানাবো। অনেকেই স্কলারশিপ নিয়ে পড়তে চান।

তাহলে চলুন নিচের অংশগুলো থেকে জেনে নেওয়া যাক কোন দেশগুলোতে সহজে স্কলারশিপ পাওয়া যায় এবং তা কিভাবে পেতে পারেন সেই সকল বিষয়ে বিস্তারিত সকল তথ্য। আশা করছি তথ্যগুলো আপনাদের উপকারে আসবে।

ফুল ফ্রি স্কলারশিপ কি

ফুল ফ্রি স্কলারশিপ হলো যে স্কলারশিপে আপনার লেখাপড়ার জন্য নিজের থেকে কোন ধরনের খরচ দিতে হয় না। যেমন ভর্তি হওয়ার খরচ, থাকা খাওয়া খরচ, টিউশন ফি, বই খাতা কিনা সহ আরো বিভিন্ন খরচ সবগুলোই প্রতিষ্ঠান বহন করবে।

যদি সহজ কথাই বলতে হয় তাহলে মোট কথা হলো আপনি লেখাপড়া করবেন দেশে অথবা বিদেশের ভালো কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কিন্তু এর জন্য আপনার পকেট থেকে এক টাকাও খরচ করতে হবে না আর এটাকেই বলা হয় ফুল ফ্রি স্কলারশিপ।

কোন দেশে সহজে স্কলারশিপ পাওয়া যায়

কোন দেশের সহজে স্কলারশিপ পাওয়া যায় এটা অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন আসলে সহজে কোন কিছুই পাওয়া যায় না যদি ভালো যোগ্যতা থাকে তাহলে স্কলারশিপ পেতে কিছুটা সহজ হয়। তারপরেও কিছু দেশ রয়েছে যেগুলো দেশে স্কলারশিপ পাওয়া কিছুটা সহজ হয়ে থাকে সেগুলো হলো:

1. চীন: চীনে CSE চাইনিজ গভারমেন্ট স্কলারশিপ দেওয়া হয়ে থাকে এখানে থাকা-খাওয়া, টিউশন ফি এবং মাসিক বেতন প্রদান করা হয়। একটু ভালো যোগ্যতা থাকলে এখানে সহজে স্কলার্শিপ পাওয়া যেতে পারে।

2. জার্মানি: জার্মানিতে DAAD আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিতেন স্কলারশিপ দিয়ে থাকে। এই স্কলারশিপ এ টিউশন ফি দিতে হয় না শুধুমাত্র সেমিস্টার ফি দিতে হয়। জার্মানিতে এই স্কলারশিপ পাওয়া তুলনামূলক কিছুটা সহজ।

আরো পড়ুন:  বাংলাদেশ মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি যোগ্যতা, আসন সংখ্যা, খরচ

3. ইতালি: যদি একাডেমিক যোগ্যতা ভালো থাকে তাহলে ইতালিতে সরকারি DSU স্কলারশিপ সহজে পাওয়া যেতে পারে। এই স্কলারশিপে থাকার খরচ এবং টিউশন ফি মওকুফ করা হয়ে থাকে।

4. অস্ট্রেলিয়া: অস্ট্রেলিয়াতে বেশ কয়েকটি স্কলারশিপ সহজে পাওয়া যায় সেগুলো হল Fellowships, Endeavour Scholarships, Australia Awards এই স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য একাডেমিক যোগ্যতা ভালো থাকতে হবে।

5. মালয়েশিয়া: IELTS এ ভালো গ্রেড থাকলে মালয়েশিয়াতে সহজে স্কলারশিপ পাওয়া যেতে পারে। মালয়েশিয়াতে MTCP এই স্কলারশিপ টি পাওয়া যায় এখানে টিউশন ফি তুলনামূলক কম থাকে।

6. দক্ষিণ কোরিয়া: IELTS এ ভালো গ্রেড অথবা কোরিয়ান ভাষায় বেসিক নলেজ থাকলে বেশ কয়েকটি স্কলারশিপ যেমন GKS ও KGSP স্কলারশিপ গুলো সহজে পাওয়া যেতে পারে। এগুলো স্কলারশিপ এ ফ্লাইট টিউশন থাকা এগুলো ফান্ডিং বহন করা হয়।

7. ফিনল্যান্ড: ফিনল্যান্ডের সরকারি এবং বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্কলারশিপ পাওয়া যায় এজন্য ইংরেজিতে যদি ভালো দক্ষতা থাকে তাহলে সবচেয়ে বেশি ভালো হয়। তাই যারা সহজে স্কলারশিপ পেতে চাচ্ছেন তারা ফিনল্যান্ডে চেষ্টা করে দেখতে পারেন।

8. জাপান: একাডেমির যোগ্যতা এবং জাপানি ভাষার যোগ্যতা যদি ভালো থাকে তাহলে জাপানে সহজে স্কলারশিপ পাওয়া যেতে পারে। জাপানে স্কলারশিপ পাওয়ার সুবিধা হল মাসিক ভাতা, টিউশন ফি প্রদান, থাকার খরচ বহন করা হয়।

9. তাইওয়ান: কিছু কিছু স্কলারশিপ রয়েছে যেগুলো তাইওয়ানে সহজে পাওয়া যায় যেমন MOFA থাকার খরচ এবং টিউশন ফি এর খরচ বহন করে থাকে। যোগ্যতা একটু ভালো থাকলে সহজে স্কলারশিপ পাওয়া যেতে পারে।

10. ফিনল্যান্ড: ফিনল্যান্ডে কিছু স্কলারশিপ পাওয়া যায় তবে এর জন্য ভালো যোগ্যতা থাকতে হবে। এখানে স্কলারশিপের মূলত টিউশন ফি ফ্রি অথবা কম নেওয়া হয়ে থাকে।

তাহলে জানা গেল অন্যান্য দেশের তুলনায় সহজে স্কলারশিপ পাওয়া যায় চীন, জার্মানি, ইতালি, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ, কোরিয়া, ফিনল্যান্ড, জাপান, তাইওয়ান, ফিনল্যান্ড এই দেশগুলোতে।

তবে একটা কথা জেনে রাখা ভালো সহজে পাওয়া যাই বলেই যে কোন ধরনের যোগ্যতা ছাড়া পেয়ে যাবেন তা কিন্তু নয় সহজে পাওয়া যেতে পারে তবে এর জন্য বেশ কিছু যোগ্যতা থাকা প্রয়োজন এবং শর্ত রয়েছে।

আরো পড়ুন:  অনার্স ১ম বর্ষ, ২য় বর্ষ, ৩য় বর্ষ, ৪র্থ বর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বইয়ের তালিকা

ফুল ফ্রি স্কলারশিপ ফর বাংলাদেশী স্টুডেন্টস

বাংলাদেশি স্টুডেন্টের জন্য ফুল ফ্রি স্কলারশিপ অনেক আন্তর্জাতিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দিয়ে থাকে তবে ফুল ফ্রি স্কলারশিপ পাওয়া অনেক কঠিন একটি কাজ।

সরকারিভাবে অনেক দেশ বাংলাদেশ স্টুডেন্টদের জন্য থাকা খাওয়া, টিউশন ফি, সেমিস্টার ফি, বিমান ভাড়া এবং মাসিক ভাতা সহ আরো বিভিন্ন খরচ বহন করে থাকে।

ব্যাচেলর, মাস্টার্স, পিএইচডি এই লেভেলের শিক্ষার্থীদের ফুল ফ্রি স্কলারশিপ দেওয়া হয়ে থাকে তবে এর জন্য IELTS স্কুল ভালো থাকতে হয় এবং যে দেশে স্কলারশিপ দেওয়া হচ্ছে সেই দেশের ভাষার ওপর ভালো দক্ষতা থাকতে হয়। ভালো GPA রেজাল্টসহ তাদের সকল শর্ত পূরণ হলে ফুল ফ্রি স্কলারশিপ প্রদান করে থাকে।

ফুল ফ্রি স্কলারশিপ কিভাবে পাওয়া যায়

ফুল ফ্রি স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য প্রথমত একাডেমির ফলাফল ভালো থাকতে হবে, ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা অর্জন করতে হবে অথবা যে দেশের স্কলারশিপ নিতে চাচ্ছেন সেই দেশের ভাষা সম্পর্কে ভালো দক্ষতা থাকতে হবে।

IELTS এ ভালো গ্রেড থাকতে হবে জিপিএ ৩.৫ থেকে ৪.০ থাকতে হবে। এবং স্কলারশিপের জন্য ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে তারপরে সবকিছু যদি ঠিকঠাক থাকে তাহলে স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে হবে। আবেদন করার পরে তারা যাচাই-বাছাই করে যদি স্কলারশিপ পাওয়ার মত যোগ্য হয়ে থাকেন তাহলে স্কলারশিপ দিবে। এভাবেই ফুল ফ্রি স্কলারশিপ পাওয়া যায়।

বিদেশে ফুল ফ্রি স্কলারশিপ পাওয়ার যোগ্যতা

বিদেশে ফুল ফি স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য সঠিক প্রস্তুতি এবং শক্তিশালী প্রোফাইলসহ বেশ কিছু যোগ্যতার প্রয়োজন। যদি এই যোগ্যতা গুলো থাকে তাহলে কেবলমাত্র বিদেশে ফুল ফ্রি স্কলারশিপ পাওয়া যেতে পারে। যোগ্যতাগুলো হলো:

একাডেমিক যোগ্যতা:

শিক্ষাগত যোগ্যতার দিক দিয়ে ভালো সিজিপিএ এবং মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকে ভালো জিপিএ পয়েন্ট থাকতে হবে। জিপিএ অথবা সিজিপিএ সর্বনিম্ন ৩.৫ থেকে ৪.০ থাকলে অগ্রাধিকার বেশি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

ভাষাগত দক্ষতা বা যোগ্যতা:

প্রায় প্রতিটি দেশে স্কলারশিপের জন্য ইংরেজি ভাষা যাচাই করা হয় এবং যারা যাদের ইংরেজি ভাষাতে ভালো দক্ষতা রয়েছে তাদেরকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। সেজন্য IELTS বেশি থাকা প্রয়োজন। এছাড়াও যে দেশে স্কলারশিপের মাধ্যমে পড়তে চাচ্ছেন সেই দেশের ভাষা জানা থাকলেও ভালো হয়।

আরো পড়ুন:  পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সাবজেক্ট লিস্ট

এ ছাড়া বিভিন্ন প্রজেক্ট এক্সপেরিয়েন্স থাকলে ভালো হয়, সুপারিশপত্র বা রেকমেন্ডেশন লেটার প্রয়োজন হয়, এছাড়াও আপনি কেন স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য যোগ্য এরকম স্পষ্ট একটি লেটার তৈরি করার মত যোগ্যতা।

এরপরে সবকিছু তথ্য সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে যথাসময়ে আবেদন করতে হবে। এবং যেগুলো কাগজপত্র জমা দেওয়ার প্রয়োজন সেগুলো নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জমা দিতে হবে। সকল যোগ্যতা যদি ঠিকঠাক থাকে তাহলে স্কলারশিপ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

কোন ক্লাস থেকে স্কলারশিপ পাওয়া যায়

বাংলাদেশের সরকারি এবং বেসরকারি উদ্যোগে বিভিন্ন শ্রেণি এবং স্তর থেকে স্কলারশিপ পাওয়া যায়। বাংলাদেশের সর্বপ্রথম পঞ্চম শ্রেণি থেকে স্কলারশিপ পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। অর্থাৎ প্রাথমিক স্তর মেধাবী এবং দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চালু করা হয়েছে।

প্রাথমিক পর্যায়ে স্কলারশিপ শেষ করার পরে এইচএসসি এবং মাস্টার্স লেভেলে বিদেশে উচ্চ শিক্ষার জন্য স্কলারশিপের সুযোগ রয়েছে। অর্থাৎ সহজ ভাষায় বলতে গেলে প্রাথমিক পর্যায়ের স্কলারশিপ গুলো আমাদের বাংলাদেশের মধ্যেই আর উচ্চ লেভেলের স্কলারশিপ গুলো বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাওয়া যায়।

স্কলারশিপ পেতে কত পয়েন্ট লাগবে

অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন স্কলারশিপ পেতে কত পয়েন্ট লাগবে আসলে স্কলারশিপ শুধুমাত্র পয়েন্টের উপর নির্ভর করে দেওয়া হয় না। অন্যান্য যোগ্যতার পাশাপাশি বাংলাদেশ স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য পয়েন্ট হিসেবে জিপিএ ৪.৫০ থেকে ৫.০ থাকা প্রয়োজন।

আর বিদেশে উচ্চ শিক্ষার জন্য স্কলারশিপ পেতে ভাষাগত দক্ষতা ভালো থাকতে হবে IELTS স্কোর বেশি থাকা প্রয়োজন। এবং সিজিপিএ পয়েন্ট সর্বনিম্ন ৩.৫ থেকে ৪.০ প্রয়োজন। তবে যদি এর বেশি পয়েন্ট থাকে তাহলে স্কলারশিপের সুযোগ পাওয়া সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।

লেখকের মন্তব্য

আশা করছি আজকের আর্টিকেলটি পড়ার পরে আপনি জানতে পেরেছেন কোন কোন দেশের সহজে স্কলারশিপ পাওয়া যায় এবং এর জন্য কি যোগ্যতা প্রয়োজন সবগুলো বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য। তারপরে অনেকের বিভিন্ন প্রশ্ন থাকতে পারে তো সেটা এ পোষ্টের নিচে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।

আর এরকম আরো শিক্ষামূলক তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করে দেখতে পারেন অথবা নিয়মিত ফলো করতে পারেন। আপনাদের সবার জন্য শুভকামনা জানিয়ে আজকের আর্টিকেলটি এখানেই শেষ করছি আল্লাহ হাফেজ।

5/5 - (1 vote)

এই ওয়েবসাইটে ভ্রমণ, শিক্ষা তথ্য এবং বিভিন্ন প্রোডাক্টের দামদর নিয়ে পোস্ট করা হয়ে থাকে। আপনারা যারা অনলাইনে এই বিষয়গুলো জানতে চান তারা ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ফলো করতে পারেন।

Sharing Is Caring:

Leave a Comment